মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র
জীবন ও কর্ম
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র (ইংরেজি: Martin Luther King, Jr), ১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল মৃত্যু হয়। তিনি একজন প্রখ্যাত আফ্রিকান-আমেরিকান মানবাধিকার কর্মী। ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি নাগরিক ও মানবাধিকারের জন্য আন্দোলন চালান। ১৯৬৪ সালে তিনি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, এবং তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।
জন্ম ও শিক্ষাজীবনের বিবরণ
জর্জিয়ার অটলান্টায়, ১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি, মার্টিন লুথার কিং জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শ্রদ্ধেয় মাইকেল কিং সিনিয়র এবং আলবার্টা উইলিয়ামস কিং এর তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। তাঁর বড় বোনের নাম উইলি ক্রিস্টিন এবং ছোট ভাইয়ের নাম আলফ্রেড ডেনিয়েল উইলিয়ামস কিং।
পাঁচ বছর বয়সে কিং পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪১ সালে মে মাসে তাঁর পিতামহী জেনি মারা যান, যার ফলে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। মৃত্যুের সময় তিনি পিতামাতার কথা অগ্রাহ্য করে প্যারেড দেখতে যান, আর তখন তিনি বাড়ির জানালা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
কিং বুকার টি. ওয়াশিংটন হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে মোরহাউস কলেজ, আটলান্টাতে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৬৩ সালে ওয়াশিংটনে পদযাত্রা কর্মসূচীতে তার ঐতিহাসিক ভাষণের শিরোনাম ছিল: “I Have a Dream”।
আরম্ভিক কর্মজীবন ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র শুরুতেই একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে কাজ করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল নাগরিক অধিকার রক্ষা। তিনি ১৯৫৫ সালে মন্টগোমারীতে বাস বয়কটের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৭ সালে তিনি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য প্রথমবারের মত তহবিল গঠন করেন। ১৯৬২ সালে আলবেনিয়া ও জর্জিয়াতে নানা বিচারবিরোধী অভিযান চালান। ১৯৬৩ সালে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক “I Have a Dream” ভাষণের মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিখ্যাত হন। তার দক্ষ বক্তা হিসেবে খ্যাতিও রয়েছে।
রাজনৈতিক জীবন
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র তার খ্রিস্টীয় আদর্শ অনুসারে অহিংস উপায়ে নাগরিক অধিকার রক্ষা করার জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। সফল এই নেতৃত্ব তার মন্ত্রভাবাপন্ন বক্তৃতার মাধ্যমে জনমনে স্থায়ী স্থান দখল করেছেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
নোবেল শান্তি পুরস্কার, ১৯৬৪ সালের ১৪ অক্টোবরে, তার অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি স্থাপন ও রক্ষা করার জন্য মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র লাভ করেন।
মৃত্যু
১৮৯৬ সালের ৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করা মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়রকে ১৯৬৮ সালের ৩ এপ্রিল হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। তখন তার সহকর্মীরা তাকে অন্যত্র চলে যাবার পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি অবিচল থাকেন এবং সবাইকে হিংসা ও ঘৃণা ত্যাগের আহ্বান জানান। পরের দিন, ৪ এপ্রিল, লুথার কিং লরেইন হোটেলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, तभी শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থী যুবক জেমস আর্ল রে তাকে গুলি করে হত্যা করেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৩৯ বছর।