বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত

 আমার সোনার বাংলা


'আমার সোনার বাংলা' বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  ১৯০৫ সালে রচনা করেন। বাউল গায়ক গগন হরকরার গান "আমি কোথায় পাব তারে" এই গানের সুর অনুকরণ কের সুর করা হয়। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গানটি রচনা করা হয়। ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এ গানটির প্রথম দশ চরণ সদ্যগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়। ১৯০৫ সালে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “বাউল” নামক গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত আছে।১৯৪৮ সালে এইচএমভির লেবেলে গানটির গ্রামোফোন রেকর্ড প্রথমবার প্রকাশিত হয়।১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জীবন থেকে নেওয়া চলচ্চিত্রে জহির রায়হান প্রথম গানটি ব্যবহার করেন। বিবিসি বাংলার তৈরি সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায়  প্রথম স্থান অধিকার করে ২০০৬ সালে। শিল্পকলা সম্পর্কিত দ্য আর্টস ডেস্ক নামক ব্রিটিশ ওয়েবসাইট ২০১২ সালে স্বর্ণপদক পাওয়ার যোগ্য ১০ টা দেশের জাতীয় সঙ্গীতের তালিকা "আমার সোনার বাংলা" স্থান পায়। শের বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় প্যারেড ময়দানে একসঙ্গে ২,৫৪,৫৩৭ জন জাতীয় সঙ্গীত গায়ে ২০১৪ সালের ২৬ মার্চ গিনেস বিশ্ব রেকর্ড কর।জাতীয় সংগীতের ইংরেজি অনুবাদ করেন সৈয়দ আলী আহসান।

বিতর্ক

"আমার সোনার বাংলা'  জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গ্রহণের পরপরই জয়া চ্যাটার্জি তার Bengal Divided গ্রন্থ বর্ণনা করেন, জাতীয় সংগীতে জাতীয় চেতনার যে দমক থাকা জরুরি, সেই দমক আমার সোনার বাংলা গানটিতে নেই।
১৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর ১৯৭৫ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাক আহমেদ কাজী নজরুল ইসলামের " নতুনের গান" বা ফররুখ আহমেদের "পাঞ্জেরী" গানের সাথে  প্রতিস্থাপনের কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান ১৭৭৯ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি পাঠান।
জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের জন্য। তিনি উল্লেখ করেন 'আমার সোনার বাংলা জাতীয় পরিচয় এবং বাংলাদেশিদের সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ এটি একজন অ-বাংলাদেশী  ব্যক্তির দ্বারা লেখা ও এখানে দেশীয় চেতনা প্রতিফলন হয়নি। তিনি " প্রথম বাংলাদেশ" গানটিকে  জাতীয় সঙ্গীতের জন্য সুপারিশ করেন।জিয়াউর রহমান নিজেও প্রথম আলো গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত করতে চেয়েছিলেন।
১৯৯০ সালের শেষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম উপাচার্য অধ্যাপক আফতাব আহমদ জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের কথা বলেন এবং নির্যাতনের শিকার হন।
২০০২ সালের ১৯ মার্চ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর ও তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদ জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের সুপারিশ করেন।
২০১৯ সালে, বাংলাদেশী গায়ক নোবেল এক সাক্ষাৎকারে বলেন , “রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ যতটা না দেশকে প্রকাশ করে তার চেয়ে কয়েক হাজার গুণ বেশি প্রকাশ করেছে প্রিন্স মাহমুদের লেখা ‘বাংলাদেশ’ গানটি”। তার এই মন্তব্য বাংলাদেশিদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করে। পরে তিনি নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান।
২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গোলাম আজমের মেঝো ছেলে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় জাতীয় সংগীত নিয়ে সমালোচনা করেন।

FAQ

জাতীয় সঙ্গীত এর রচইতা কে?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

আমার সোনার বাংলা রচনার প্রেক্ষাপট কী?
১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গানটি রচনা করা হয়।

আমার সোনার বাংলা গানটি কোন গানের সুরের অনুকরণ?
গগন হরকরারের গান "আমি কোথায় পাব তারে"।

আমার সোনার বাংলা গানটিকে কবে জাতীয় সংগীত এর মর্যাদা দেওয়া হয়?
১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি।

জহির রায়হান "আমার সোনার বাংলা" গানটি ব্যবহার করেন কোন চলচিত্রে?
জীবন থেকে নেওয়া।

জীবন থেকে নেওয়া চলচ্চিত্র টি কত সালে মুক্তি পায়?

 ১৯৭০ সালে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url