স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের আলোড়ন তোলা কিছু গান

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের আলোড়ন তোলা কিছু গান



আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো " গানটি সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রচনা করেন। আবদুল লতিফ গানটি সুরারোপ করেন। তবে পরবর্তীতে আলতাফ মাহমুদের করা সুরটিই অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করে, ১৯৫৪ সালের প্রভাত ফেরীতে প্রথম গাওয়া হয় আলতাফ মাহমুদের সুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটি এবং এটিই এখন প্রাতিষ্ঠানিক সুর।বর্তমানে গানটি হিন্দি, মালয়, ইংরেজি, ফরাসি, সুইডিশ, জাপানিসহ ১২টি ভাষায় গাওয়া হয়।১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জীবন থেকে নেওয়া চলচ্চিত্রে জহির রায়হান প্রথম গানটি ব্যবহার করেন

রণ-সংগীত

১৯২৯ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম "চল্ চল্ চল্" রচনা করেন। শিখা পত্রিকায় " নতুনের গান শিরোনামে প্রকাশ পায়। পরবর্তীতে সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থে অন্তর্গত করা হয়। দাদরা তালের গানটি কবি নিজেই সুরারোপ করেন। পাকিস্তান আমলে (১৯৪৭-১৯৭১) এই কবিতাটি স্কুলে পড়ানো হতো, তখন স্কুলপাঠ্য সরকারি বইতে "মহাশ্মশান"-এর পরিবর্তে "গোরস্থান" শব্দটি প্রতিস্থাপন করা হয়। ১৯৭২ সালের ১৩ই জানুয়ারি মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের রণ-সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়।বাংলাদেশের যে কোনো সামরিক অনুষ্ঠানে এই গানটির ২১ লাইন যন্ত্রসংগীতে বাজানো হয়। ২০০৬ সালে বিবিসির জরীপে সেরা ২০টি বাংলাগানের তালিকা এটা ১৮ তম স্থান অধিকার করে।

কারার ঐ লৌহকপাট

"কারার ঐ লৌহকপাট"  ১৯২১ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের জেলযাত্রার পর গানটি রচনা ও সুরআরোপ  করেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম । দেশবন্ধুর স্ত্রী বাসন্তীদেবী তখন ‘বাঙ্গলার কথা’ সাপ্তাহিক পত্রিকার দায়িত্ব নিয়েছেন। বাসন্তীদেবীর অনুরোধে সাড়া দিয়েই কবি গানটি রচনা করন। ‘ভাঙার গান’ শিরোনামে ‘বাঙ্গলার কথা’ পত্রিকার ‘২০ জানুয়ারি ১৯২২’ সংখ্যায় প্রকাশিত হয় ।ইংরেজ কর্তৃক ‘ভাঙার গান’ বাজেয়াপ্ত হলে ২৫ বছর গানটির দালিলিক অস্তিত্ব হারিয়ে যায়।১৯২৯ সালে অ্যালবার্ট হলে কবিকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ঘোষণা করেন, নজরুলের গান গাওয়া হবে যুদ্ধক্ষেত্রে, কারাগারে। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ‘ভাঙার গান’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৪৯ সালে। গিরীন চক্রবর্তী গানটি রেকর্ড করেন।১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জীবন থেকে নেওয়া চলচ্চিত্রে জহির রায়হান প্রথম গানটি ব্যবহার করেন।

জয় বাংলা, বাংলার জয়

"জয় বাংলা, বাংলার জয়" একটি দেশাত্ববোধক গান যা ১৯৭০ সালের মার্চে রচনা করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সাত কোটি বাঙালির বঞ্চনা-দুর্দশা আর স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষাকে ছন্দময় করে গানটি রচনা করেন। গানটির সুর প্রদান করেন আনোয়ারা পারভেজে আর কন্ঠ দেন শাহনাজ বেগম ও আব্দুল জব্বার।গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সূচনা সঙ্গীত হিসাবে প্রচারিত হত।

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি

"মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি" গোবিন্দ হালদার রচিত এবং আপেল মাহমুদ কর্তৃক সুরারোপিত দেশাত্মবোধক বাংলা গান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনুপ্রেরণা যোগাতে এই গানটি রচনা করা হয়।  গানটি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে ১৯৭১ সালে আপেল মাহমুদ খালি গলায় পরিবেশন করেন।

FAQ

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি গানটির গীতিকার কে?
গোবিন্দ হালদার।

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি গানটির সুরকার কে?
আপেল মাহমুদ।

বাংলা বেতার কেন্দ্রের সূচনা সঙ্গীত হিসাবে কোন গানটি প্রচারিত হত?
জয় বাংলা, বাংলার জয়।

জয় বাংলা, বাংলার জয় গানটির গীতিকার কে?
গাজী মাজহারুল আনোয়ার।

জয় বাংলা, বাংলার জয় গানটির সুরকার কে?
আনোয়ারা পারভেজ।

জয় বাংলা, বাংলার জয় গানটিতে কন্ঠ দেন কে?
শাহনাজ বেগম ও আব্দুল জব্বার।

কারার ঐ লৌহকপাট গানটি কতসালে রচনা করা হয়?
১৯২১ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের জেলযাত্রার পর গানটি রচনা করা হয়।

ভাঙার গান কবি কাজী নজরুল ইসলাম কোন ধরবনের কাব্যগ্রন্থ?
বিদ্রোহাত্মক।

ভাঙার গান কাব্যগ্রন্থ কত সালে বাজেয়াপ্ত করা হয়?
১১ নভেম্বর ১৯২৪ তারিখে।

কারার ঐ লৌহকপাট গানটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
ভাঙার গান কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

বাংলাদেশের রণ-সংগীত কোন টি?
চল্ চল্ চল্।

চল্ চল্ চল্ গানটি কত সালে রচনা করা হয়?
১৯২৯ সালে।

সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থে অন্তর্গত কোন গানটি?
চল্ চল্ চল্।

নতুনের গান শিরোনামে কোন গানটি প্রকাশ পায়?
চল্ চল্ চল্।

চল্ চল্ চল্ গানটি কোন পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়? 
শিখা পত্রিকায়।

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটির গানটির গীতিকার কে?
সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী।

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটির সুরকার কে?
আবদুল লতিফ ।

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটির বর্তমান  সুরকার কে?
আলতাফ মাহমুদ।

আলতাফ মাহমুদ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটির সুরআরোপ করেন কত সালে?
১৯৫৪ সালে।

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটি প্রথম কোন চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়?
১৯৭০ সালে জহির রায়হানের জীবন থেকে নেওয়া চলচ্চিত্রে।

বর্তমানে কতটি ভাষায় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটি গাওয়া হয়?
১২টি ভাষায় গাওয়া হয়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url